Health-and-Nutrition/C2/Breast-crawl/Bengali

From Script | Spoken-Tutorial
Revision as of 17:16, 31 July 2020 by Debosmita (Talk | contribs)

(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)
Jump to: navigation, search
Time Narration
00:00 ব্রেস্ট ক্রল” বা “স্তন খুঁজে নেওয়া” বিষয়ে “মৌখিক প্রশিক্ষণ”-এ আপনাকে স্বাগত জানাই।
00:05 এই প্রশিক্ষণে, আমরা শিখব: “স্তন খুঁজে নেওয়া” বা ব্রেস্ট ক্রল কাকে বলে,
00:10 স্তন খুঁজে নেওয়ার প্রক্রিয়া আর
00:13 স্তন খুঁজে নেওয়ার গুরুত্ব।
00:18 আসুন, প্রথমে আমরা বুঝে নিই, “স্তন খুঁজে নেওয়া” বা ব্রেস্ট ক্রল কা কে বলে।
00:23 যেকোনো বাচ্চা খাওয়ার একটা সহজাত প্রবৃত্তি নিয়ে জন্মায়।
00:28 জন্মদানের পরপর, বাচ্চাকে মায়ের খোলা তলপেটের ওপর রাখলে, বাচ্চা মায়ের স্তন খুঁজে নিতে পারে আর বুকের দুধ খাওয়া শুরু করতে পারে।
00:40 এই পুরো পদ্ধতিকে বলে “স্তন খুঁজে নেওয়া”।
00:46 খেয়াল রাখা দরকার যে “স্তন খুঁজে নেওয়া”-র এই কাজটি পূর্ণ মেয়াদের, স্থিতিশীল স্বাস্থ্যের বাচ্চা যারা প্রাকৃতিকভাবে বা অপারেশনের (সিজারিয়ান) মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে, তাদের ওপর করা যায়।
00:58 আর, যারা জন্মানোর পরপর ভালোভাবে কেঁদেছে।
01:03 “স্তন খুঁজে নেওয়া”-র কাজটি অস্থিতিশীল স্বাস্থ্যের বাচ্চাদের, যাদের জন্মের সময়ে ওজন কম হয়েছে, তাদের ওপর করা যায় না। কারণ, এতে তাদের নিঃশ্বাসের সমস্যা হতে পারে, যেমন নিঃশ্বাস আটকে যাওয়া।
01:15 এখন, আমরা এই পদ্ধতিটি শিখব আর এরপর এটির গুরুত্ব জানব।
01:22 প্রথমে, দেখতে হবে যে জন্মদানের ঘরের তাপমাত্রা যেন ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকে।
01:29 এরপর বাচ্চাকে মায়ের খোলা তলপেটের ওপর রেখে তাকে পরিষ্কার করুন।
01:35 একটা পরিষ্কার শুকনো কাপড় দিয়ে হাত দুটো ছাড়া বাচ্চার সারা শরীর পরিষ্কার করুন।
01:42 মনে রাখবেন, বাচ্চার হাত দুটো ভেজা রাখতে হবে।
01:46 পরিষ্কার করার সময়ে বাচ্চার ত্বকের ওপর সাদা রঙের পাতলা আবরণ তুলে ফেলবেন না।
01:53 ঠাণ্ডা আবহাওয়া থাকলে এটি তাকে সুরক্ষা দেয়।
01:56 বাচ্চাকে পরিষ্কার করার পর ভেজা কাপড়টা সরিয়ে ফেলুন।
02:01 বাচ্চাকে শুকনো করে, ধাই-মা নাড়ির ধুকপুকুনি পরীক্ষা করবেন।
02:08 যখন সেটির ধুকপুকুনি থেমে যাবে, তিনি তন্ত্রীটি কেটে দেবেন।
02:13 তারপর, বাচ্চাকে মায়ের খোলা তলপেটের ওপর এমনভাবে রাখতে হবে যাতে তার পেটের সঙ্গে মায়ের পেট ছুঁয়ে থাকে।
02:22 মায়ের দুই না-ধোয়া স্তনের মাঝে বাচ্চার মাথাটা রাখতে হবে।
02:26 মায়ের স্তনের নীচে বাচ্চার মুখ থাকবে।
02:30 এখন “স্তন খুঁজে নেওয়া”-র জন্য বাচ্চাকে ঠিকভাবে রাখা হবে জেনে নি ।
02:37 সদ্যোজাত বাচ্চার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া খুব স্বাভাবিক হয়, তাই সে সহজেই মায়ের স্তনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
02:46 এরপর যেটা করতে হবে – একটা পরিষ্কার শুকনো কাপড় দিয়ে বাচ্চাকে ও মাকে একসঙ্গে ঢেকে দিতে হবে যাতে তারা হালকা গরম থাকে।
02:54 বাচ্চার মাথায় একটা টুপি দিয়ে রাখুন।
02:57 খেয়াল রাখুন – আমরা টুপি আর কাপড় পরবর্তী ছবিতে দেখাইনি।
03:04 এর ফলে “স্তন খুঁজে নেওয়া”-র সময়ে বাচ্চার অবস্থান আমরা ভালোভাবে বুঝতে পারব।
03:10 বাচ্চাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পর, মায়ের হাত দিয়ে বাচ্চার পিঠে আশ্রয় দেওয়ার জন্য মাকে সাহায্য করুন।
03:18 আসুন, বাচ্চার সক্ষমতা নিয়ে কথা বলি যেগুলো “স্তন খুঁজে নেওয়া”-র জন্য সাহায্য করে।
03:24 জন্মের পর বাচ্চা খুব সতর্ক থাকে আর তার সহজাত প্রবৃত্তি থাকে।
03:29 তার অপরিষ্কার হাতের গন্ধ তার লালা উৎপাদনে সাহায্য করে।
03:35 তাছাড়া, বাচ্চা তার সীমিত দৃষ্টি দিয়ে তার মায়ের মুখ আর এরিওলা দেখতে পায়।
03:43 এরিওলা হল স্তনের বোঁটার চারিপাশের কালো অংশ।
03:47 অবশেষে, বাচ্চা তার হাত-পায়ের সাহায্যে নড়াচড়া করতে শুরু করে। সে ধীরে ধীরে মায়ের স্তনের দিকে এগিয়ে যায়।
03:57 যদিও, কিছু কিছু বাচ্চা সঙ্গে সঙ্গে এগোতে শুরু করে আর কিছু কিছু বাচ্চা সময় নেয়।
04:04 স্তনে পৌঁছে গিয়ে, বাচ্চা প্রথমে চেষ্টা করে তার হাত দিয়ে স্তনটি আঁকড়ে ধরতে।
04:12 এই সময়ে বাচ্চাকে ও মাকে কোনও বাধা দেবেন না, যতক্ষণ না বাচ্চা প্রথম বুকের দুধ খায়।
04:20 এই পদ্ধতির সময়ে, মা আর ধাই-মা দুজনকেই ধৈর্য ধরতে হবে।
04:27 প্রথমবার খাওয়ার জন্য, মায়ের স্তন পর্যন্ত পৌঁছতে বাচ্চার ৩০ থেকে ৬০ মিনিট সময় লাগতে পারে।
04:35 বুকের দুধ খাওয়ানোর শুরুর সময়ে, বাচ্চা নিজের মুখ চওড়া করে খুলবে আর মায়ের স্তনের সঙ্গে গভীর ভাবে সংযোগ করে থাকবে।
04:45 খাওয়ানো শেষ হয়ে গেলে, বাচ্চাকে ওই একই অবস্থায় ঘণ্টা খানেকের মতো সময় থাকতে দিন।
04:52 এরকম করলে, মা ও বাচ্চার মধ্যে বন্ধন সুন্দর হয়ে ওঠে।
04:58 যদিও, মায়ের যদি কোনও ওষুধপত্র চলে, তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন।
05:05 জন্ম দেওয়ার পর, কখনও কখনও এমন হতে পারে যে মাকে জন্ম দেওয়ার ঘর থেকে অন্য কোনও ঘরে নিয়ে যেতে হয়।
05:13 সেরকম ক্ষেত্রে, মাকে অন্য ঘরে নিয়ে গিয়ে, আগে যেমন বলা হয়েছে, মায়ের তলপেটের ওপর বাচ্চাকে সঙ্গে সঙ্গে রেখে দুজনের ঘনিষ্ঠ ছোঁয়া বা জড়িয়ে রাখতে হবে
05:29 এখন, আসুন, অপারেশনের (সিজারিয়ান) মাধ্যমে জন্ম নেওয়া বাচ্চাদের জন্য “স্তন খুঁজে নেওয়া” বিষয়ে কথা বলি।
05:35 এটার জন্য, তলপেটের বদলে মায়ের বুকের ওপরে বাচ্চাকে এমনভাবে রাখতে হবে যাতে বাচ্চার পা দুটো মায়ের মাথার দিকে থাকে।
05:47 বাচ্চার বুক আর পেট মায়ের কাঁধে থাকবে আর মুখ থাকবে স্তনের ওপর।
05:54 অপারেশনের ঘরে যতক্ষণ সম্ভব বাচ্চাকে স্তন চুষতে দিন।
05:59 মনে রাখবেন, জন্ম দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, মা ও বাচ্চা – দুজনের ত্বকের সঙ্গে ছোঁয়া লেগে থাকা যেকোনো সদ্যোজাত বাচ্চার জন্য সবথেকে জরুরি যত্ন হয়।
06:09 খেয়াল রাখবেন, “স্তন খুঁজে নেওয়া” সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই জন্মের পর সদ্যোজাত বাচ্চার অন্যান্য যত্ন নেওয়া উচিৎ।
06:17 এখন, আসুন, সদ্যোজাত বাচ্চার জন্য “স্তন খুঁজে নেওয়া”-র গুরুত্ব সম্বন্ধে কথা বলি।
06:23 স্তন খুঁজে নিলে বাচ্চা মায়ের প্রথম দুধ, যেটাকে “কোলোস্ট্রাম” বলে, সেটা খেতে পারে।
06:29 এটার রং হালকা হলদেটে হয় আর ঘন গাঢ় হয়।
06:33 খেয়াল রাখবেন, জন্মের পর প্রত্যেকবার বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ে, বাচ্চা যতটা পরিমাণ কোলোস্ট্রাম খায়, এটা তত বাড়তে থাকে।
06:43 প্রত্যেকবার বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় একেকটি স্তন থেকে প্রথম দিনে বাচ্চা ৫ মিলিলিটার খায়,
06:47 দ্বিতীয় দিনে ১০ মিলিলিটার,
06:50 তৃতীয় দিনে ২৫ মিলিলিটার,
06:53 চতুর্থ দিনে ৪০ মিলিলিটার আর পঞ্চম দিনে ৫৫ মিলিলিটার।
07:05 সদ্যোজাত বাচ্চার জন্য এটা যথেষ্ট।
07:09 সুতরাং, কোলোস্ট্রাম ছাড়া বাচ্চাকে আর কিছু খাওয়ানোর দরকার নেই।
07:15 “কোলোস্ট্রাম” বাচ্চার জন্য প্রথম টিকা হিসেবে কাজ করে আর এতে রোগজীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার জন্য দরকারি প্রোটিনগুলো থাকে যেগুলো বাচ্চার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
07:27 জন্মের পর এটাই বাচ্চার প্রথম শক্তি ও ক্ষমতার উৎস।
07:33 “কোলোস্ট্রাম” রক্তে “গ্লুকোজের” পরিমাণ কম হতে দেয় না।
07:37 এটা বাচ্চার অন্যান্য শারীরিক ক্রিয়াগুলো বজায় রাখে।
07:42 এটা বাচ্চার মগজের (ব্রেন) ভালো বিকাশ করতে সাহায্য করে।
07:46 এটা বাচ্চাকে প্রথম পায়খানা করতে সাহায্য করে।
07:50 “স্তন খুঁজে নেওয়া”-র জন্য বাচ্চার শরীর হালকা গরমও থাকে, কারণ মায়ের শরীরের সঙ্গে তার শরীর ছুঁয়ে থাকে।
07:57 মায়ের স্তনের সঙ্গে কিভাবে গভীর সংযোগ করাযায় সেটা বাচ্চা নিজে নিজে শিখে নেয়।
08:04 “স্তন খুঁজে নেওয়া”-র ফলে মায়ের শরীরের ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলো বাচ্চার শরীরেও যায়।
08:08 এই ব্যাকটেরিয়াগুলো বাচ্চার অন্ত্রে ঢুকে রোগজীবাণুর সঙ্গে লড়াই করে।
08:13 মোট কথা, এটা বাচ্চার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
08:18 “স্তন খুঁজে নেওয়া” বাচ্চার মধ্যে ভালোবাসা আর সুরক্ষার অনুভূতি নিয়ে আসে, ফলে মা ও বাচ্চার মধ্যে বাঁধন সুন্দর হয়।
08:29 “স্তন খুঁজে নেওয়া”-র কারণে মায়েরও অনেক উপকার হয়।
08:34 বাচ্চার পায়ের নড়াচড়াগুলো মায়ের জরায়ুতে চাপ দেয়। এই চাপ জরায়ুর সংকোচনে আর ফুল খসতে সাহায্য করে।
08:45 বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করলে মায়ের শরীরে ‘অক্সিটোসিন” বাড়ে।
08:51 “অক্সিটোসিন” বাড়লে জরায়ুর ফুল খসতেও সাহায্য হয়।
08:56 এইভাবে, “স্তন খুঁজে নেওয়া” মায়েদের রক্ত কম হয়ে যাওয়া এবং “রক্তাল্পতা” রোগ কম করতে পারে।
09:03 যখন শরীরে লাল রক্তকণিকার সংখ্যা কমে যায়, সেটাকে বলে “রক্তাল্পতা”।
09:08 এর ফলে মায়ের ক্লান্তি আর দুর্বলতা হতে পারে।
09:13 সুতরাং, “স্তন খুঁজে নেওয়া” হল মা ও বাচ্চা দুজনের জন্যেই খুবই উপকারি একটা প্রাকৃতিক উপায়।
09:21 “স্তন খুঁজে নেওয়া”-র এই প্রশিক্ষণ এখানেই শেষ হল।

আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।

Contributors and Content Editors

Debosmita, Sakinashaikh, Sneharout321