Health-and-Nutrition/C2/Breast-conditions/Bengali

From Script | Spoken-Tutorial
Jump to: navigation, search
Time
Narration
00:00 দুধ উৎপাদনকারী মায়েদের “স্তনের অবস্থা” বিষয়ে এই “মৌখিক প্রশিক্ষণ”-এ আপনাকে স্বাগত জানাই।
00:06 এই প্রশিক্ষণে আমরা শিখব – রক্ত বা তরল জমে স্তন ফুলে ওঠা (ব্রেস্ট এনগর্জমেন্ট) আর দুধের নালিতে বা স্তনের বোঁটায় রোগজীবাণু সংক্রমণ হয়ে অসুখ হওয়া (মাস্টাইটিস) সম্বন্ধে।
00:13 আসুন, ব্রেস্ট এনগর্জমেন্ট বা স্তনের আকারে বৃদ্ধি সম্বন্ধে জেনে নিই।
00:17 সাধারণত বা স্তনের আকারের বৃদ্ধি জন্ম দেওয়ার পর ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে এনগর্জমেন্ট হয়।
00:23 এটা একসঙ্গে দুটো স্তনেই হয়।
00:28 মায়েরা স্তনের পূর্ণতার সঙ্গে স্তনের এনগর্জমেন্টকে গুলিয়ে ফেলবেন না।
00:33 তাই, আমরা এখন স্তনের পূর্ণতা আর স্তনের এনগর্জমেন্টের তফাৎ নিয়ে কথা বলব।
00:40 এনগর্জমেন্ট হলে, স্তন দুধে ভরে গিয়ে ব্যাথায় শক্ত হয়ে ফুলে ওঠে।
00:46 এতে স্তন চকচকে হয়ে ওঠে আর চামড়ায় শিরাগুলো স্পষ্ট দেখা যায়।
00:52 মায়ের জ্বর হতে পারে যা ২৪ ঘণ্টার বেশি থাকে আর বাচ্চার পক্ষে ঠোঁট লাগানো কঠিন হয়ে যায়।
01:01 কিন্তু, স্তনের পূর্ণতা স্বাভাবিক একটা ব্যাপার।
01:04 স্তনের পূর্ণতা হলে বড় দেখতে হয় কিন্তু চকচকে ভাব হয় না।
01:10 স্তনের পূর্ণতা হলে ব্যথা হয় না আর জ্বর থাকে না।
01:17 এখন, আমরা দুধ উৎপাদনকারী মায়েদের ব্রেস্ট এনগর্জমেন্ট কেন হয় তা জানব।
01:23 নীচের কারণগুলোর জন্য ব্রেস্ট এনগর্জমেন্ট হতে পারে –
01:27 জন্ম দেওয়ার পর মা যদি বাচ্চাকে না খাওয়ান।
01:32 মা যদি যথাসময়েবারেবারে বাচ্চাকে না খাওয়ান।
01:36 বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ে মায়ের স্তনে বাচ্চা যদি ভালো করে ঠোঁট না লাগায়, বা গভীর ভ্যানে সংযোগ না করে আর
01:42 মা হঠাৎ করে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দেন।
01:47 এবার, আমরা জেনে নেব কিভাবে এনগর্জমেন্ট সারিয়ে তোলা যায়।
01:51 প্রথমে, মাকে বলুন পরিষ্কার জল দিয়ে নিজের হাত ধুতে।
01:56 তারপর, মায়ের কাছাকাছি বাচ্চাকে এমনভাবে আনুন যাতে মা বাচ্চাকে দেখতে, শুঁকতে আর ছুঁতে পারেন।
02:03 বাচ্চা যদি খুব ছটফটে হয়, মা বাচ্চার ব্যবহার করা কাঁথা, তোয়ালে ইত্যাদি শুঁকতে পারেন।
02:08 তারপর, মা এক গ্লাস জল খাবেন।
02:12 তারপর, ৫ থেকে ১০ মিনিট একটা হালকা গরম ভেজা কাপড় স্তনের ওপর রাখুন, বা
02:18 হালকা গরম জলে মা স্নান করতে পারেন।
02:21 এতে বুকের দুধ সহজে বেরিয়ে আসে।
02:24 তারপর, স্বাস্থ্যকর্মী মাকে নিশ্চিন্তে আরাম করতে বলবেন, কারণ মাথায় অতিরিক্ত চিন্তা থাকলে দুধের ধারার অনায়াস প্রতিক্রিয়া বা লেট ডাউন রিফ্লেক্সের ক্ষতি হয়, আর
02:33 দুধ বেরোয় না।
02:36 এবার, স্বাস্থ্যকর্মী বা পরিবারের কেউ মায়ের ঘাড় আর পিঠের ওপর দিকে মালিশ করবেন।
02:43 এতে বুকের দুধ বেরোতে সুবিধা হয়।
02:46 কারণ, পিঠের ওপর দিকে আর স্তনে একই স্নায়ু যায়।
02:52 তারপর, মা নিজের স্তনে আঙুল গোল করে ঘুরিয়ে হালকা মালিশ করতে শুরু করবেন।
02:57 মালিশ করলে মায়ের আরাম লাগবে আর দুধের ধারার অনায়াস প্রতিক্রিয়া সহজ হবে।
03:03 এইসব করলে অক্সিটোসিন বেরোতে সুবিধা হয়।
03:07 একে বলে অক্সিটোসিনের প্রতিক্রিয়া বা দুধের ধারার অনায়াস প্রতিক্রিয়া।
03:12 অক্সিটোসিন হল একটা হরমোন যা বুকের দুধ বের করতে সাহায্য করে।
03:17 তারপর, মা নিজের হাতে অল্প দুধ বের করে দেবেন যাতে “এরিওলা” নরম হয়।
03:23 এতে ঠিক করে স্তনে ঠোঁট লাগাতে বাচ্চার সুবিধা হবে।
03:27 বুকের দুধ বের করার সময়ে, মা “এরিওলা”-র চারিপাশে চাপ দেবেন।
03:33 দুধ বের করার পর, মা বাচ্চার মুখে এরিওলা এগিয়ে দেবেন, কারণ বাচ্চার পক্ষে নিজে থেকে এগিয়ে লেপটে যাওয়া কঠিন হতে পারে।
03:43 দুদিক থেকেই বুকের দুধ খাওয়াতে চেষ্টা করুন।
03:46 দুবার খাওয়ানোর মাঝে, মায়ের স্তনের ওপর ৫ থেকে ১০ মিনিট ভেজা ঠাণ্ডা কাপড় রাখুন। বা,
03:54 স্তনের ওপর বাঁধাকপির ঠাণ্ডা পাতা রাখতে পারেন।
03:58 এই বাঁধাকপির পাতাগুলো ফ্রিজে বা মাটির পাত্রে রাখতে হবে।
04:04 এতে স্তনের নরম ভাব আর ফুলে ওঠা কমতে পারে।
04:09 তারপর, মায়ের উচিৎ বারেবারে বুকের দুধ খাওয়ানো।
04:13 এবার, আমরা জেনে নেব কিভাবে আমরা এনগর্জমেন্ট হওয়া আটকাতে পারি।
04:17 প্রথমে, বাচ্চার খিদে পাওয়ার সংকেতগুলো বুঝতে চেষ্টা করুন। যেমন, শরীর এপাশে ওপাশে ঘোরানো,
04:25 রুটিং রিফ্লেক্স বাড়িয়ে দেওয়া -
04:28 রুটিং রিফ্লেক্স হল বাচ্চার মুখে, গালে বা চিবুকে কিছু লাগলেই সেদিকে তার মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া।
04:36 আঙুল চোষা।
04:39 খুব দেরি হলে, বাচ্চা কাঁদতে শুরু করে।
04:43 খিদে পাওয়ার গোড়ার দিকের সংকেতেই বাচ্চাকে বুকের দুধ খাইয়ে দিন। বাচ্চার কান্নার জন্য অপেক্ষা করবেন না।
04:50 নিশ্চিত করুন যে বাচ্চা ঠিক করে ঠোঁট লাগিয়েছে আর ভালোভাবে খেয়েছে।
04:55 মনে রাখবেন, একটা স্তন সম্পূর্ণ খালি হলে তবেই আপনি অন্য স্তনটি দেবেন।
05:02 এরপর, আমরা শিখব “মাস্টাইটিস” কাকে বলে।
05:08 এতে স্তনের কিছু অংশ লাল হয়ে ফুলে শক্ত হয়ে যায়।
05:14 মায়েদের খুব ব্যথা ও জ্বর হয়, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
05:18 অনেক মায়েদের প্রথম ৬ সপ্তাহের মধ্যে মাস্টাইটিস হয়।
05:22 কিন্তু, এটা দুধ উৎপাদন চলাকালীন যেকোনো সময়ে হতে পারে।
05:27 কখনও কখনও এটা ব্রেস্ট এনগর্জমেন্টের সঙ্গে গুলিয়ে যায়।
05:31 যদিও, এনগর্জমেন্ট পুরো স্তনের আর কখনও কখনও দুটো স্তনেরই ক্ষতি করে।
05:37 কিন্তু “মাস্টাইটিস” স্তনের কিছুটা অংশের ক্ষতি করে আর সাধারণত একটাই স্তনে হয়।
05:44 মাস্টাইটিস এনগর্জ হওয়া স্তনেও হতে পারে বা আটকে যাওয়া দুধের নালিতেও হতে পারে।
05:51 এবার, আটকে যাওয়া দুধের নালির চিকিৎসা না হলে কিভাবে মাস্টাইটিস হয় তা নিয়ে আমরা কথা বলব।
05:59 স্তনের মধ্যে থেকে দুধ না বের করলে দুধের নালি আটকে যায়।
06:04 সাধারণত, এই নালিটা স্তনের একটা অংশ হয় যেটা ঘন দুধে ভরে আটকে যায়।
06:11 এর ফলে সেখানে একটা ডেলা পাকিয়ে যায়। এই ডেলাটা নরম হয় আর ডেলার ওপরের চামড়া কখনও কখনও লালচে হয়ে ওঠে।
06:20 আটকে যাওয়া নালি আর এনগর্জমেন্টের জন্য দুধ বেরোতে পারে না।
06:24 যখন এনগর্জমেন্ট আর নালি আটকে যাওয়ার জন্য স্তনের ভেতরে দুধ রয়ে যায়, তাকে বলে “স্টাসিস”।
06:32 যদি এই স্টাসিস না সারানো হয়, তাহলে এর ফলে স্তনের কোষে জ্বালা করতে পারে। একে বলে সংক্রমণ ছাড়া মাস্টাইটিস।
06:42 যখন ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের জন্য স্তনে সংক্রমণ হয়, সেটাকে বলে সংক্রমণের কারণে মাস্টাইটিস।
06:51 নীচের কারণগুলোর জন্য, শরীরের নানান ছোটখাটো ফুটো বা চিড়ের মধ্যে দিয়ে ব্যাকটেরিয়া সহজেই ঢুকতে পারে:
06:56 যদি স্তনে ছোটখাটো ফুটো বা চিড় থাকে, মাস্টাইটিস সারানো হয় না আর চিকিৎসার দেরি হয়।
07:06 খেয়াল রাখবেন যে স্তনের ফোঁড়া হল মাস্টাইটিস না সারানোর ফলাফল।
07:11 এবার, আসুন, মাস্টাইটিসের কারণ সম্বন্ধে কথা বলি।
07:15 মাস্টাইটিসের প্রথম ও প্রধান কারণ হল বারেবারে না খাওয়ানো।
07:21 যদি দুধ উৎপাদনকারী মা বাইরে কাজকর্মের জন্য যান, তাহলে বারেবারে বুকের দুধ খাওয়ানো খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
07:27 বারেবারে না খাওয়ানোর আরেকটা কারণ হতে পারে যে মা বা বাচ্চা অসুস্থ।
07:33 দ্বিতীয় কথা হল স্তনের বোঁটা থেকে খাওয়ানো। এতে বাচ্চা পুরোপুরিভাবে স্তন খালি করতে পারে না।
07:40 তৃতীয় কথা হল দুধের অতিরিক্ত যোগান।
07:43 চতুর্থ কথা হল তাড়াতাড়ি বুকের দুধ খাওয়ানো ছাড়িয়ে দেওয়া, বাচ্চাকে বুকের দুধ ছাড়া অন্যান্য খাবার খাওয়ানো।
07:50 পঞ্চম কথা হল আঁটসাঁট করে জামাকাপড় পরা – মা যদি আঁটসাঁট করে জামাকাপড় পরেন, বিশেষ করে রাতের বেলায় মা যদি এঁটে ব্রা পরেন, তাহলে স্তনে চাপ পড়ে আর দুধের নালি আটকে যেতে পারে।
08:03 ষষ্ঠ হল মা হওয়ার মানসিক ঝক্কিঝামেলা – মায়ের মনে যদি কোনও চাপ থাকে, তাহলে দুধের ধারার অনায়াস প্রতিক্রিয়ার ক্ষতি হয়।
08:12 সপ্তম হল স্তনের বোঁটায় কোনও ফুটো বা চিড় – এতে স্তনের কোষে ব্যাকটেরিয়া ঢুকে পড়তে পারে আর মাস্টাইটিস হতে পারে।
08:22 এবার দেখে নিই মাস্টাইটিসের কি চিকিৎসা হয়।
08:26 প্রথমে কারণটা খুঁজতে চেষ্টা করুন আর তারপর চিকিৎসা শুরু করুন।
08:31 বুকের দুধ খাওয়ানোর আগে মা চাপ দেওয়ার জন্য হালকা গরম কাপড়ের পুঁটুলি ব্যবহার করতে পারেন।
08:35 বা, হালকা গরম জলে স্নান করতে পারেন।
08:37 যে স্তনে ক্ষতি হয়েছে সেই স্তন থেকেই প্রথমে খাওয়ানো শুরু করুন।
08:42 যদি ব্যথা বাড়তে থাকে বা দুধের ধারা সহজে না আসে, তাহলে অন্য স্তনটি খাওয়ান।
08:50 মনে রাখবেন, বারেবারে বুকের দুধ খাওয়ানো খুবই জরুরি।
08:55 যদি স্তনের বোঁটায় বা এরিওলায় ক্ষত না থাকে, তাহলে মা ক্ষতি হওয়া স্তন থেকেই দুধ খাওয়াতে পারেন।
09:04 মনে রাখবেন, মা যখনই মাস্টাইটিস হওয়া স্তন থেকে বাচ্চাকে খাওয়াবেন, তখন –
09:09 বাচ্চার সংক্রমণের কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কিনা খেয়াল করবেন, কারণ বাচ্চার সংক্রমণ হওয়ার একটা ঝুঁকি থেকে যায়
09:17 কারণ ক্ষতি হওয়া স্তনের দুধে অনেকরকম ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকে।
09:24 স্তনে মালিশ করলে দুধের যোগান বাড়তে পারে।
09:28 ক্ষতি হওয়া অংশের দিক থেকে বোঁটার দিকে খুব হালকা মালিশ করতে হবে।
09:34 আর, মাকে যথেষ্ট বিশ্রাম নিতে হবে।
09:37 যদি লক্ষণগুলো মারাত্মক হয়ে ওঠে, তাহলে মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
09:40 স্তনে ফোঁড়া হলে অপারেশন করে ফোঁড়া সারাতে হবে আর অ্যান্টিবায়োটিক নিতে হবে।
09:47 এগুলো ছাড়া, মাকে বিশেষ করে চেষ্টা করতে হবে যাতে নিজের শরীর আলগাভাবে আরামে থাকে আর সমানভাবে ও গভীরভাবে নিঃশ্বাস নিতে হবে।
09:55 তিনি হালকা গানবাজনা শুনতে শুনতে বাচ্চার কথা ভাবতে পারেন যাতে দুধের ধারা সহজে বেরোতে শুরু করে।
10:04 মনে রাখবেন, মাস্টাইটিস হওয়া আটকানোর জন্য ঠিকভাবে ঠোঁট লাগানো বা গভীর ভাবে সংযোগ খুব জরুরি।
10:09 এতে নালি আটকে যাবে না আর বাচ্চা যথেষ্ট দুধ পাবে।
10:14 স্তনের এইসব সমস্যা আটকানোর জন্য আসল কথা হল – বাচ্চাকে ঠিকভাবে রেখে তার গভীর ভাবে সংযোগ সঙ্গে আর বারেবারে বুকের দুধ খাওয়ানো।
10:24 দুধ উৎপাদনকারী মায়েদের স্তনের অবস্থার ওপরে আমাদের এই প্রশিক্ষণ এখানেই শেষ হল।

আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।

Contributors and Content Editors

Debosmita, Sakinashaikh